ফুলবাড়িয়ায় আনারসের দাম কম, বিপাকে ৪ হাজার কৃষক


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৪৮ পিএম, ২৩শে জুলাই ২০২৩; আপডেট: ০৫:৫০ পিএম, ২৩শে জুলাই ২০২৩


ফুলবাড়িয়ায় আনারসের দাম কম, বিপাকে ৪ হাজার কৃষক
আনারস

ফুলবাড়িয়া,ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া সন্তোষপুর রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নে, হাতিলেট, পাহাড় অনন্তপুর, রাঙ্গামাটিয়া এবং নাওগাঁও ইউনিয়নে নাওগাঁও,সন্তোষপুর গ্রামে প্রচুর পরিমানে আনারস উৎপাদন হয়। 


এছাড়াও উপজেলার কালাদহ, এনায়েতপুর, বাক্তা ইউনিয়নে আনারস চাষাবাদ হয়। ফসলের মাঠ বিস্তৃর্ন সবুজ শ্যামল প্রকৃতি,আর গাছগাছালি বন জঙ্গল ঘেরা পাহাড়ি এই জনপথ।


ফুলবাড়িয়া বন বিট সন্তোষপুর (বিট) অফিসের তথ্য সূত্রে ৩ হাজার ৬শ ৩৯ পয়েন্ট ১৪ দশমিক একর সরকারী জমি আছে। তারমধ্যে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন রাবার প্রক্রিয়াজাত (কারখানার) জন্য ১৯৮৯ সালে মে,মাসে ১৩শ ৬১.৯৭ পয়েন্ট (একর) সরকার ৯৯ বছরের নামে চুক্তি অনুযায়ী বরাদ্ধ দিয়েছে। 


বাকী ২৩শত একর জমির পরিমান  থেকে মূলত সরকারের কাছ থেকে বেশীর ভাগ (পারটিসিপেন্ট) অংশগ্রহনকারী বা উপকারভোগী সাধারণ কৃষকেরা বিভিন্ন ধরনের ফসল আবাদ এর জন্য লীজ নিয়ে কৃষকেরা বন বিভাগের আওতায় বনজ ঔষধী গাছের নিচে চাষাআবাদের উপযোগী করে এ আনারস চাষ করেন।

 

প্রতি একর জমিতে ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার চারা রোপন করা যায়। এ কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারী উপজাতী গারো মহিলারা  কাজ করেন।  বেশ কয়েক প্রকার আনারস চাষ করা হয় তারমধ্যে জলডিঙ্গি ও কেলেন্ডার প্রসিদ্ধ। 


বর্তমানে কেলেন্ডার ফল বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। এ বছর উৎপাদন ও ফলন ভাল হয়েছে। রাঙ্গামাটিয়া, নাওগাঁও ইউনিয়নের সন্তোষপুর বেশী পরিমান আনারস উৎপাদন ও বাজারজাত করা হয়।


কৃষক সাইদুল ইসলাম জানায় জমির ভাড়া ,সার বীজ,কাজের মজুরীসহ আনুসাঙ্গিক খরচ মিলে চারা রোপন থেকে শুরু করে  বাজারে বিক্রি করা পযর্ন্ত প্রতি পিস ফল ১৫ থেকে ২০ টাকা খরচ হয়। কিন্তু বাজারে আনারসের রপ্তানীর ও চাহিদা খুবই কম।তাই আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে ১০ টাকা প্রতি পিস। 


রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে আরেক জন কৃষক শান্ত মিয়া বলেন, বিগত ২ বছর আগে করোনা মহামারিতেও এত কম দামে আনারস বেঁচা বিক্রি করি নাই। এবছরও দাম কম।


ব্যবসায়ী শ্রী রঞ্জিত চন্দ্র দত্তের সাথে কথা হয় তার বাড়ী নাওগাঁও তিনি বলেন, আমি ১ লক্ষ ফল প্রতি পিস ২০ টাকার বেশী দরে অগ্রীম টাকা দিয়ে কিনেছি। এখন বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি করা যায় যদি এমন বাজার থাকে তাহলে আমি পথে নেমে যাব। প্রায় ২০ বছর ধরে ব্যবসা করি কিন্তু এত খারাব সময় এর আগে কখনও যায়নি।

 

অপর ব্যবসায়ী আ: বারেক তিনি দিনাজপুরে  ট্রাকে করে মাল দেন। তিনি বলেন ২ লক্ষ পিস আনারস কৃষকের কাছ থেকে অগ্রীম কিনেছি। আমার কমপক্ষে ৫ লক্ষ টাকা লোকসান যাবে। 


রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য বাবুল মিয়া প্রায় ১৫ একর জমিতে আনারসের বাগান করেছেন। আমার বহু টাকা লোকসান হবে সেইসাথে তিনি বলেন, মানুষ অন্যান্য ফলের বাগান ছাঁদে কিংবা বাড়ীর আঙ্গিনায় করে নিজেদের অভাব পুরন করছে বিধায় আনারসের প্রতি তেমন চাহিদা নেই।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: রকিব আল রানা বলেন ৯ শত ৫০ হেক্টর জমিতে এবার আনারস আবাদ হয়েছে। প্রায় ৪ হাজার কৃষক আনারস চাষ করেছে । 


ফুলবাড়িয়ার উপজেলার আনারস প্রসিদ্ধ। বাজারে দাম কিছুটা কম এবছর প্রচুর পরিমানে বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে একসাথে আনারসগুলো পেঁকে গিয়েছে ।যার ফলশ্রুতিতে বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশী পাশাপাশি মৌসুমী ফলের জোগান বেশী থাকায় বাজার আনারসের পবিবর্তে অন্যান্য ফল মানুষ কিনছে। 


আরএক্স/